‘নয়নচারা’ গল্পের মূলভাব ও অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ বাংলাদেশের অন্যতম একজন খ্যাতিমান সাহিত্যিক। তিনি মূলত রোমান্টিকতা ও ধর্মের মোহাচ্ছন্নতা ঝেড়ে ফেলে গল্পসাহিত্যে নিয়ে এসেছিলেন বাস্তবতার প্রত্নইতিহাস। মানুষকে তিনি আবিষ্কার করতে চেয়েছিলেন যন্ত্রণা ও দুঃখের মধ্যে, নিঃসীম একাকিত্ব ও অসহায়ত্বের মধ্যে। এরূপ একটি গল্প হলো নয়নচারা।
নয়নচারা - সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ |
দুর্ভিক্ষ প্রপীড়িত গ্রাম নয়নচারা। এ গ্রামের তিনজন অধিবাসী আমু, ভুতো আর ভুতনি শহরে এসেছে দু’মুঠো ভাতের সন্ধানে। কিন্তু শহর বড় নির্মম। নিষ্ঠুর হৃদয়বিদারক পরিবেশে আমুকে সান্তনা দেয় ময়ূরাক্ষী নদী। শহরে তারা অবহেলিত। লঙ্গরখানার যৎসামান্য খাবারে তাদের সবার প্রাণ বাঁচে না। ক্ষুধার বিষাক্ত কামড়ে বেঘোরে প্রাণ হারায় ভুতো এবং আরও অনেকে। ভুতনি দানবীয় কাশির কবলে পড়েও দুর্মর জীবনকে টেনে চলে। স্মৃতি ভারাক্রান্ত আমুর মনে জাগে সুতীব্র ক্রোধ ও প্রতিহিংসা। ফুটপাতে শুয়ে আমু নিজের মধ্যে স্বপ্নকে প্রশ্রয় দেয়। তার চোখে ভাসে ময়ূরাক্ষী নদী, ভাসে জেলে ডিঙি, মাছ। দয়াহীন এ শহরে মানুষের চেয়ে কুকুরের মূল্য বেশি। শহরবাসীরা আত্মক্রেন্দ্রিক। দীনজনের প্রতি নজর দেওয়ার মতো ফুসরত বা মায়া তাদের নেই। স্বপ্নবিহারী আমু দোকানে ঝুলন্ত কলা দেখে ফেলে আসা জীবনের স্মৃতি দ্বারা আক্রান্ত হয়। ক্ষুধাদীর্ণ, শ্রান্ত-অবসন্ন আমু স্বল্পালোকিত জানালাগুলোর দিকে চেয়ে চেয়ে ভাত চায়। কিন্তু তার আর্ত চিৎকার প্রাচীরে বাধা পেয়ে ফিরে আসে। শ্মশানঘাটের মরাপোড়ানোর গন্ধে সে বিচলিত হয় না, অস্থির হয় মানুষের মানবেতর আচরণে। এরকম পরিস্থিতিতে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে আমুর সামনে একটি দরজা খুলে যায় এবং একটা মেয়ে দরজা খুলে বেরিয়ে আসে। মেয়েটি অতি আস্তে আস্তে অতি শান্ত গলায় শুধু বলে ‘নাও।’ মেয়েটি তাকে সামান্য ভাত দেয়। রুধিরাক্ত, শহরাভিজ্ঞ সে আমুর সামনে, এ আনন্দময় বিপর্যস্ত সময়ে, চিরচেনা নয়নচারা গ্রাম ভেসে ওঠে অকস্মাৎ। দুর্ভিক্ষপীড়িত অসহায় এ ক্লিষ্ট মানুষটি মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করে ‘নয়নচারা গাঁয়ে কি মায়ের বাড়ি?’ মেয়েটি কোনো উত্তর দেয়নি। কারণ আমুর প্রশ্নের মর্মার্থ সে হৃদয়ঙ্গম করতে পারেনি।
এ গল্পে আমুর মর্মবেদনা অপরিজ্ঞাত নয়। আমুর চেতনায় যুদ্ধ, দুভিক্ষ এবং তৎসৃষ্ট প্রতিক্রিয়ার উপস্থিতি যেমন লক্ষ করা যায়, তেমনি দেখা যায় আমুর গোটা সত্তা জুড়ে নয়নচারা গাঁয়ের অনাবিল ছায়াভাস। এজন্য ইটকাঠের মধ্যে জীবনযাপনকারী শহুরেদের মধ্যে সে নয়নচারা গাঁয়ের সুশোভনব প্রাণবান মানুষগুলোকে অন্বেষণ করে।
নয়নচারা গল্পের বহির্বাস্তবে আছে ১৩৫০ সালের ভয়াবহ মন্বন্তর, অন্তর্বাস্তবে আছে স্নিগ্ধ, পল্লবঘন ময়ূরাক্ষী নদী-তীরবর্তী নয়নচারা গ্রামের সুশান্তি। তাই দেখা যায়, শহরের আবহাওয়া, শহুরে আচরণ আমুকে ক্ষুব্ধ করে। ক্ষুৎপীড়িত শহুরে জীবনযাপন করেও সে নয়নচারা গাঁয়ের স্মৃতি-অন্বেষী। স্মৃতি-ভারাতুর আমু শহরের অলিতে গলিতে অন্নের জন্য ঘুরে ফেরে। কিন্তু শহুরেরা আত্মকেন্দ্রিক। অন্যকে করুণা করার মানসিকতা তাদের নেই।
‘নয়নচারা’ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত একটি মর্মস্পর্শী ছোটগল্প, যেখানে গ্রামীণ বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষ, দারিদ্র্য, এবং মানুষের জীবন সংগ্রামের করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে। গল্পটির কেন্দ্রীয় চরিত্র আমু, তার সঙ্গে আরও দুই সঙ্গী ভুতো ও ভুতনি, দারিদ্র্যের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে শহরে আশ্রয় নেয় দু’মুঠো অন্নের খোঁজে। শহরের নিষ্ঠুর বাস্তবতা তাদের গ্রামীণ জীবনের শান্তি ও সহজ সরলতাকে পুরোপুরি বিপরীতভাবে উপস্থাপন করে।
গল্পের পটভূমি ১৩৫০ বঙ্গাব্দের ভয়াবহ মন্বন্তর। নয়নচারা নামক গ্রামটি গ্রামীণ জীবনের পল্লবিত প্রতিচ্ছবি, যেখানে ময়ূরাক্ষী নদী, জেলে নৌকা, এবং প্রকৃতির স্নিগ্ধতা জড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু শহরের কোলাহলপূর্ণ, নির্মম পরিবেশে আমুর স্মৃতিতে সেই গ্রাম কেবল একটি মায়াময় কল্পনা হয়ে ফিরে আসে। শহরে তারা অসহায়, লঙ্গরখানার সামান্য খাবারে তাদের সবার জীবনধারণ সম্ভব হয় না। ক্ষুধার যন্ত্রণা ও অবহেলার মধ্যেই ভুতো মৃত্যুবরণ করে, আর ভুতনি জীবনের দুর্মর লড়াই চালিয়ে যায়।
শহরের হৃদয়হীন মানুষের আচরণ আমুর চেতনায় গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে। ফুটপাতে শুয়ে থাকা অবস্থায় সে স্বপ্ন দেখে তার গ্রাম নয়নচারার, যেখানে প্রকৃতি ও মানবিক সম্পর্কের সজীবতা ছিল। শহুরে মানুষদের আত্মকেন্দ্রিকতা, কুকুরের প্রতি তাদের যত্ন এবং দীন-দরিদ্রের প্রতি উদাসীনতা আমুর মধ্যে প্রতিশোধস্পৃহা এবং দুঃখের মিশ্র অনুভূতি জাগায়।
গল্পের চূড়ান্ত পর্বে, আমু ক্ষুধার তাড়নায় একটি দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। সেখান থেকে একটি মেয়ে ভাত দিয়ে তাকে সাহায্য করে। সেই সহানুভূতির মুহূর্তে আমুর চোখে আবারও ভেসে ওঠে তার হারিয়ে যাওয়া গ্রাম নয়নচারা। মেয়েটিকে দেখে তার মনে হয়, সে যেন নয়নচারা গ্রামেরই একজন।
গল্পের বহিরঙ্গের চিত্র ১৩৫০ সালের দুর্ভিক্ষের নিষ্ঠুর বাস্তবতা, আর অন্তর্লোকের চিত্র নয়নচারা গ্রামে প্রকৃতি ও মানবিক সম্পর্কের স্নিগ্ধতা। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ এখানে দারিদ্র্যের করুণ রূপ, শহরের হৃদয়হীনতা এবং গ্রামীণ জীবনের প্রতি মানুষের গভীর মমত্ববোধ একত্রিত করে একটি শক্তিশালী বার্তা তুলে ধরেছেন। আমুর স্মৃতি এবং বর্তমানের দ্বন্দ্ব আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সভ্যতার কোলাহলপূর্ণ অগ্রগতিতে মানুষ তার শেকড় থেকে কতটা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
নিভৃত বাংলার আপডেট পেতে Google News এ Follow করুন
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর:
১। আমু কখন শহরের মানুষের মধ্যে নয়নচারা গাঁয়ের প্রতিচ্ছবি দেখতে পায়?
উত্তর: আমু শহরের মানুষের কাছে সামান্য সহানুভূতি পেলেই তাদের মধ্যে নয়নচারা গাঁয়ের প্রতিচ্ছবি দেখতে পায়
২। আমুর স্মৃতিতে নয়নচারা গাঁ কীসের প্রতীক হয়ে উঠেছে?
উত্তর: আমুর স্মৃতিতে নয়নচারা গাঁ শান্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে
৩। ‘নয়নচারা’ গল্পে গ্রামকে কীসের প্রতীক হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে?
উত্তর: ‘নয়নচারা’ গল্পে গ্রামকে পরিপূর্ণ শান্তির প্রতীক হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে
৪। ‘নয়নচারা’ গল্পে শহর কীসের প্রতীক হয়ে উঠেছে?
উত্তর: ‘নয়নচারা’ গল্পে শহর হৃদয়হীনতা, নির্মমতা, নিষ্ঠুরতা ও হিংস্রতার প্রতীক হয়ে উঠেছে
৫। ‘ভেতরে কুকুর, বাইরে কুকুর নয়’- এ কথাটির অর্থ কী?
উত্তর: ‘ভেতরে কুকুর, বাইরে কুকুর নয়’- এ কথাটির অর্থ শহরের মানুষ বাইরে মানুষ হলেও স্বভাব কুকুরের মতো।
৬। শক্তিশালীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারটি আমুর কাছে কী ধরনের অনুভূতি ছিলো?
উত্তর: শক্তিশালীর কাছে ক্ষমা চাওয়ার ব্যাপারটি আমুর কাছে পবিত্র সান্ত্বনার অনুভূতি ছিলো
৭। ‘মাথা কালো, জমি কালো, মন কালো’- উক্তিটিতে আমুর কোন উপলব্ধি প্রকাশ পেয়েছে?
উত্তর: ‘মাথা কালো, জমি কালো, মন কালো’- উক্তিটিতে আমুর শহরের পরিবেশের বৈরিতা প্রকাশ পেয়েছে
৮। আমুর পরিচিত নয়নচারা গ্রামের মেয়েটির নাম কী?
উত্তর: আমুর পরিচিত নয়নচারা গ্রামের মেয়েটির নাম ঝিরা
৯। ‘নয়নচারা’ গল্পটির রচয়িতা কে?
উত্তর: ‘নয়নচারা’ গল্পটির রচয়িতা সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ
১০। ‘নয়নচারা’ গল্পটি কোন পটভূমিকায় রচিত?
উত্তর: ‘নয়নচারা’ গল্পটি তেতাল্লিশের মন্বন্তরের পটভূমিকায় রচিত
১১। ‘নয়নচারা’ গল্পের মূল উপজীব্য কী?
উত্তর: ‘নয়নচারা’ গল্পের মূল উপজীব্য দুর্ভিক্ষতাড়িত ছিন্নমূল অসহায় মানুষের জীবনচিত্র
১২। ‘নয়নচারা’ গল্পের মূল চরিত্র কোনটি?
উত্তর: ‘নয়নচারা’ গল্পের মূল চরিত্র আমু
১৩। আমু চরিত্রটি সমাজের কোন শ্রেণির মানুষের প্রতিনিধি?
উত্তর: আমু চরিত্রটি সমাজের ছিন্নমূল মানুষের প্রতিনিধি
১৪। ‘নয়নচারা’ গল্পের নয়নচারা কী?
উত্তর: ‘নয়নচারা’ গল্পের নয়নচারা একটি গ্রামের নাম
১৫। ‘নয়নচারা’ গল্পে গ্রামের কোন ছবি ফুটে উঠেছে?
উত্তর: ‘নয়নচারা’ গল্পে গ্রামের সাধারণ ছবি আমুর স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছে
১৬। ‘নয়নচারা’ গল্পে উল্লিখিত নদীটির নাম কী?
উত্তর: ‘নয়নচারা’ গল্পে উল্লিখিত নদীটির নাম ময়ূরাক্ষী
১৭। ‘নয়নচারা’ গল্পে শহরের জনশূন্য রাস্তাটিকে কীসের সাথে তুলনা করা হয়?
উত্তর: ‘নয়নচারা’ গল্পে শহরের জনশূন্য রাস্তাটিকে ময়ূরাক্ষী নদীর সাথে তুলনা করা হয়
১৮। ‘ফুটপাতে ওরা সব এলিয়ে পড়ে রয়েছে’- উক্তিটিতে ‘ওরা’ বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: ‘ফুটপাতে ওরা সব এলিয়ে পড়ে রয়েছে’- উক্তিটিতে ‘ওরা’ বলতে ছিন্নমূল মানুষের কথা বলা হয়েছে
১৯। ফুটপাতে এলিয়ে পড়ে থাকা মানুষগুলোকে কীসের সাথে তুলনা করা হয়েছে?
উত্তর: ফুটপাতে এলিয়ে পড়ে থাকা মানুষগুলোকে ছড়ানো খড়ের সাথে তুলনা করা হয়েছে
২০। ফুটপাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লেও কার চোখে ঘুম নেই?
উত্তর: ফুটপাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লেও আমুর চোখে ঘুম নেই
২১। ‘নয়নচারা’ গল্পে ভুতনি কে?
উত্তর: ‘নয়নচারা’ গল্পে ভুতনি আমুর মতো একজন ভাসমান / ছিন্নমূল মানুষ
২২। ‘মন তার জেগে রয়েছে চেনা নদীর ধারে’- এখানে কার মনের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: ‘মন তার জেগে রয়েছে চেনা নদীর ধারে’- এখানে আমুর মনের কথা বলা হয়েছে
২৩। ‘একবার শুরু হলে আর থামতে চায় না’- উক্তিটিতে কী না থামার কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: ‘একবার শুরু হলে আর থামতে চায় না’- উক্তিটিতে ভুতনির কাশি না থামার কথা বলা হয়েছে
২৪। ‘নয়নচারা’ গল্পে ভুতনির ভাইয়ের নাম কী?
উত্তর: ‘নয়নচারা’ গল্পে ভুতনির ভাইয়ের নাম ভুতো
২৫। শহরের কুকুরের চোখে কী নেই?
উত্তর: শহরের কুকুরের চোখে বৈরিতা নেই
২৬। আমু শহরের মানুষের চোখে কী দেখেছে?
উত্তর: আমু শহরের মানুষের চোখে পাশবিক হিংস্রতা দেখেছে
২৭। ‘নয়নচারা’ গল্পে ‘আসল চোখ’ ও ‘নকল চোখ’ অর্থ কী?
উত্তর: ‘নয়নচারা’ গল্পে ‘আসল চোখ’ অর্থ হলো দৃষ্টিভঙ্গির উদারতা ও ‘নকল চোখ’ অর্থ হলো দৃষ্টিভঙ্গির সংকীর্ণতা
২৮। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর জন্ম তারিখ কী?
উত্তর: ১৫ আগস্ট ১৯২২।
২৯। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড।
৩০। তাঁর বাবা কী পেশায় নিয়োজিত ছিলেন?
উত্তর: সরকারি ম্যাজিস্ট্রেট।
৩১। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর প্রথম উপন্যাসের নাম কী?
উত্তর: "লালসালু"।
৩২ "লালসালু" কোন সালে প্রকাশিত হয়?
উত্তর: ১৯৪৮ সালে।
৩৩। "লালসালু" উপন্যাসের প্রধান চরিত্রের নাম কী?
উত্তর: মজিদ।
৩৪। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর নাটকের সংকলনের নাম কী?
উত্তর: "ত্রয়ী"।
৩৫। তাঁর রচিত বিখ্যাত গল্পগ্রন্থের নাম কী?
উত্তর: "নয়নচারা"।
৩৬। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন?
উত্তর: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়।
৩৭। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর দ্বিতীয় উপন্যাসের নাম কী?
উত্তর: "চাঁদের অমাবস্যা"।
৩৮। "চাঁদের অমাবস্যা" কোন সালে প্রকাশিত হয়?
উত্তর: ১৯৬৪ সালে।
৩৯। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর শেষ উপন্যাসের নাম কী?
উত্তর: "কাঁদো নদী কাঁদো"।
৪০। তিনি কোন আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করেছেন?
উত্তর: ইউনেস্কো।
৪১। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর স্ত্রী কোন দেশের নাগরিক ছিলেন?
উত্তর: ফ্রান্স।
৪২। তাঁর স্ত্রীর নাম কী?
উত্তর: অ্যান মারি।
৪৪। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ কোন ভাষায় সাহিত্য রচনা করেছেন?
উত্তর: বাংলা।
৪৫। "লালসালু" কী নিয়ে রচিত?
উত্তর: গ্রামীণ কুসংস্কার ও ধর্মান্ধতা।
৪৬। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর রচনায় কোন মানবিক দিকটি বেশি প্রাধান্য পেয়েছে?
উত্তর: মানুষের মনস্তত্ত্ব।
৪৭। তিনি কোন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন?
উত্তর: বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার।
৪৮। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ কোন সালে মারা যান?
উত্তর: ১০ অক্টোবর ১৯৭১।
৪৯। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স কত ছিল?
উত্তর: ৪৯ বছর।
৫০। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর সাহিত্যকর্মে প্রধান বিষয়বস্তু কী?
উত্তর: গ্রামীণ জীবন, সংস্কৃতি ও মানুষের অন্তর্দহন।
৫১। ‘নয়নচারা’ গল্পের লেখক কে?
উত্তর: সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ।
৫২। গল্পের পটভূমি কোন ঘটনার ওপর ভিত্তি করে নির্মিত?
উত্তর: ১৩৫০ সালের ভয়াবহ মন্বন্তর।
৫৩। গল্পের প্রধান চরিত্রের নাম কী?
উত্তর: আমু।
৫৪। আমুর সঙ্গীদের নাম কী?
উত্তর: ভুতো ও ভুতনি।
৫৫। আমু, ভুতো ও ভুতনি কোথায় যায়?
উত্তর: শহরে।
৫৬। তারা শহরে কেন আসে?
উত্তর: দু’মুঠো অন্নের খোঁজে।
৫৭। শহরের পরিবেশ কেমন ছিল?
উত্তর: হৃদয়হীন ও নির্মম।
৫৮। গল্পে আমুকে সান্ত্বনা দেয় কোন নদী?
উত্তর: ময়ূরাক্ষী নদী।
৫৯। লঙ্গরখানার খাবারে কাদের প্রাণ বাঁচে না?
উত্তর: ভুতো এবং আরও অনেকের।
৬০। ভুতনি কোন রোগে আক্রান্ত হয়?
উত্তর: দানবীয় কাশি।
৬১। শহরের মানুষদের আচরণ কেমন ছিল?
উত্তর: আত্মকেন্দ্রিক ও নির্দয়।
৬২। আমুর চেতনায় কোন গ্রামের স্মৃতি বারবার ফিরে আসে?
উত্তর: নয়নচারা।
৬৩। নয়নচারা গ্রামের প্রধান বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর: প্রকৃতির স্নিগ্ধতা ও শান্তি।
৬৪। শহরের কোন বিষয়টি আমুকে সবচেয়ে বেশি ক্ষুব্ধ করে?
উত্তর: দীন-দরিদ্রদের প্রতি অবহেলা।
৬৫। আমুর ক্ষুধার যন্ত্রণা প্রকাশ পায় কীভাবে?
উত্তর: ফুটপাতে শুয়ে ভাতের জন্য চিৎকার করে।
৬৬। আমুর সামনে কোন ব্যক্তি সহানুভূতি দেখায়?
উত্তর: একটি মেয়ে।
৬৭। মেয়েটি আমুকে কী দেয়?
উত্তর: সামান্য ভাত।
৬৮। আমু মেয়েটিকে কী প্রশ্ন করে?
উত্তর: "নয়নচারা গাঁয়ে কি মায়ের বাড়ি?"
৬৯। নয়নচারা গল্পের মূল থিম কী?
উত্তর: দারিদ্র্যের কষ্ট ও গ্রামীণ জীবনের প্রতি মমত্ববোধ।
৭০। গল্পের শেষাংশে আমু কী স্মরণ করে?
উত্তর: নয়নচারা গ্রামের স্নিগ্ধ পরিবেশ।