ঐকতান কবিতার মূলবক্তব্য ও অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
ঐকতান কবিতার মূলবক্তব্য ও অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, নিভৃত বাংলা ব্লগে তোমাদের স্বাগত। গত ব্লগে আমরা আত্ম-বিলাপ কবিতার মূল বক্তব্য ও অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। যারা আগের ব্লগ পড়নি তারা এখান থেকে আগের ব্লগ দেখে নিতে পারো। আজকের ব্লগে আমরা ‘ঐকতান’ কবিতার মূলকথা এবং ‘ঐকতান’ কবিতা থেকে পরীক্ষায় কমন উপযোগী অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এগুলো ভালোভাবে চর্চা করলে আশাকরি ‘ঐকতান’ কবিতার মূলভাব এবং অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন নিয়ে তোমাদের আর কোনো দ্বিধা থাকবে না। তাহলে চলো কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় ফিরে যাই।
ঐকতান কবিতার মূল বক্তব্য:
প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, ঐকতান কবিতার মূল বক্তব্য আমরা তখনই বুঝতে পারবো, যখন ‘ঐকতান’ শব্দটির সঠিক অর্থ অনুধাবন করতে পারবো। সাধারণত সঙ্গীতে ‘ঐকতান’ বলতে একসাথে বাজে এমন দুই বা ততোধিক সুরকে বুঝায়। অবশ্য এর সাথে মেলোডি বা সুতানের মৌলিক পার্থক্য আছে। পার্থক্যটা হলো- মেলোডি বা সুতান বাজে স্বয়ংসম্পূর্ণভাবে আর ঐকতান বাজে সুতানের পটভূমিতে বা সুতানের সাথে। সুতরাং আমরা বলতে পারি, ঐকতান বলতে এমন কিছু বোঝায় যা অন্য কিছুর সাথে মিল আছে।
প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, তোমরা জানো ঐকতান কবিতাটি কবি রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুরের শেষ বয়সের লেখা একটি আত্মসমালোচনামূলক কবিতা। দীর্ঘ জীবন পরিক্রমণের শেষপ্রান্তে
পৌঁছে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পিছন ফিরে তাকিয়ে সমগ্র জীবনের সাহিত্য সাধনার সাফল্য
ও ব্যর্থতার হিসাব খুঁজেছেন এ কবিতায়। নিজের সীমাবদ্ধতা ও অপূর্ণতার কথা কবি অকপটে
স্বীকার করে নিয়েছেন এখানে। নিজের অকিঞ্চিৎকরতা ও ব্যর্থতার স্বরূপ তিনি অনুভব করেছেন
জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। কবি স্বীকার করে নিয়েছেন বিশাল এই পৃথিবীর অনেক কিছুই
কবির অদেখা ও অজানা রয়ে গেছে। পৃথিবী জুড়ে বিশাল আয়োজন চললেও কবির মন পড়ে ছিল সেই আয়োজনের
ছোট্ট এক কোণ জুড়ে। এজন্য কবি তার জ্ঞানের দীনতা বা সীমাবদ্ধতাকে স্বীকার করে নিয়েছেন।
আর এ দীনতা কাটানোর জন্য তিনি নানা দেশের বিচিত্র অভিজ্ঞতা, বিভিন্ন গ্রন্থের চিত্রময়
বর্ণনার বাণী ভিক্ষালব্ধ ধনের মতো আহরণ করে নিজের কাব্য ভাণ্ডার পূর্ণ করার চেষ্টা
করেছেন। এতকিছুর পরেও কবির সহজ স্বীকারোক্তি হলো- তিনি বিপুলা এ পৃথিবীর সর্বত্র প্রবেশ
করতে পারেন নি। তাই কবি আহ্বান করেছেন এমন কোনো কবিকে যারা মৃত্তিকা সংলগ্ন হবে এবং
যারা শ্রমজীবী মানুষের অংশীদার হয়ে কবির অসম্পূর্ণতাকে পূর্ণতা দান করবেন।
ঐকতান কবিতার অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর: প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ
এবার আমরা ঐকতান কবিতা থেকে পরীক্ষায় কমন উপযোগী পঞ্চাশটি অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
নিয়ে আলোচনা করবো। তোমরা এগুলো চর্চা করলে আশাকরি পরীক্ষায় ভালো নম্বর তুলেতে পারবে।
১। ঐকতান শব্দের অর্থ কী? [জা.বি ২০১৫, ২০১৭]
উত্তর: ঐকতান শব্দের অর্থ সম্মিলিত সুর।
২। ‘ঐকতান’ কবিতায় কার উপর ভর দিয়ে সমস্ত সংসার
চলছে? [জা.বি ২০১৯]
উত্তর: ঐকতান কবিতায় চাষি, তাঁতি, জেলের উপর ভর দিয়ে সমস্ত
সংসার চলছে।
৩। ‘ঐকতান’ কবিতায় ‘বিপুলা পৃথিবী’ বলতে কী বোঝানো
হয়েছে?
উত্তর: ঐকতান কবিতায় বিপুলা পৃথিবী বলতে পৃথিবীর বিশালতার
কথা বোঝানো হয়েছে।
৪। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন কবে?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন ১৮৬১ সালের ৭ মে
(১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ)।
৫। কৃত্রিম পণ্যে ব্যর্থ হয়ে যায় কী?
উত্তর: কৃত্রিম পণ্যে ব্যর্থ হয়ে যায় গানের পশরা।
৬। ‘ঐকতান’ কবিতার রচয়িতা কে?
উত্তর: ঐকতান কবিতার রচয়িতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
৭। ‘কান পেতে আছি’ কথাটি ঐকতান কবিতায় কী অর্থে
ব্যবহৃত হয়েছে?
উত্তর: কান পেতে আছি কথাটি ঐকতান কবিতায় ‘অপেক্ষা করা’ অর্থে
ব্যবহৃত হয়েছে।
৮। ঐকতান কবিতায় ‘সর্বত্র প্রবেশের দ্বার’ বলতে
কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: ঐকতান কবিতায় সর্বত্র প্রবেশের দ্বার বলতে অন্তরময়ের
সাথে অন্তর মেশানোর সর্বত্র স্থানকে বোঝানো হয়েছে।
৯। ‘ঐকতান’ কবিতায় কবি নিজেকে কোথাকার কবি বলে
পরিচয় দিয়েছেন?
উত্তর: ঐকতান কবিতায় কবি নিজেকে পৃথিবীর কবি বলে পরিচয় দিয়েছেন।
১০। ‘ঐকতান’ কবিতায় সবচেয়ে দুর্গম পথ কী?
উত্তর: ঐকতান কবিতায় সবচেয়ে দুর্গম পথ আপন অন্তরাল।
১১। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার পান কত
সালে?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার পান ১৯১৩ সালে।
১২। ‘আমি পৃথিবীর কবি’ বলতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর: আমি পৃথিবীর কবি বলতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজেকে সাধারণ
মানুষের কবি বলে দাবি করেছেন।
১৩। ‘ঐকতান’ কবিতায় কবি কাকে বারবার নমস্কার
করবেন?
উত্তর: ঐকতান কবিতায় কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গণমানুষের জ্ঞাতি
যে কবি তাঁকে বারবার নমস্কার করবেন।
১৪। ‘ঐকতান’ কবিতায় কবি কী কুড়িয়ে আনেন?
উত্তর: ঐকতান কবিতায় কবি চিত্রময়ী বর্ণনার বাণী কুড়িয়ে আনেন।
১৫। ‘সাহিত্যের আনন্দের ভোজ’ বলতে কী বোঝানো
হয়েছে?
উত্তর: সাহিত্যের আনন্দের ভোজ বলতে সাহিত্যের রস সর্বস্বতার
বিষয়টি বোঝানো হয়েছে।
১৬। ‘রয়ে গেছে বহু ফাঁক’ এ বাক্যে কবি কোন সত্যটি
প্রকাশ করেছেন?
উত্তর: ‘রয়ে গেছে বহু ফাঁক’ এ বাক্যে কবি তাঁর সাহিত্যে বিশ্বমাত্রিকতার
অভাব রয়েছে সেই সত্যটি প্রকাশ করেছেন।
১৭। ‘ঐকতান’ কবিতায় কবি কেন চিত্রময়ী বর্ণনার
বাণী কুড়িয়ে আনেন?
উত্তর: নিজের জ্ঞানের দীনতাকে পরিপূর্ণ করার জন্য কবি চিত্রময়ী
বর্ণনার বাণী কুড়িয়ে আনেন।
১৮। ‘ঐকতান’ কবিতায় অন্তরময়ের পরিচয় পাওয়া যায়
কীভাবে?
উত্তর: অন্তরময়ের সাথে অন্তর মেশালে অন্তরময়ের পরিচয় পাওয়া
যায়।
১৯। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছদ্মনাম কী?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছদ্মনাম ভানুসিংহ ঠাকুর।
২০। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্প কয় খণ্ডে বিভক্ত?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্প চার খণ্ডে বিভক্ত।
২১। ‘জীবনে জীবন যোগ করা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: জীবনে জীবন যোগ করা বলতে বোঝানো হয়েছে সমাজের প্রতিটি
মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করা।
২২। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে গুরুদেব উপাধি প্রদান
করেন কে?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে গুরুদেব উপাধি প্রদান করেন মাহাত্মা
গান্ধী।
২৩। ‘ঐকতান’ কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোন
কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?
উত্তর: ঐকতান কবিতাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জন্মদিনে’ কাব্যগ্রন্থের
অন্তর্গত।
২৪। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন কাব্যের জন্য নোবেল
পুরস্কার পান?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গীতাঞ্জলি কাব্যের ইংরেজি অনুবাদ
Song Offerings এর জন্য নোবেল পুরস্কার পান।
২৫। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাব্যনাট্যের সংখ্যা
কতটি?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাব্যনাট্যের সংখ্যা ১৯ টি।
২৬। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাব্যের সংখ্যা কত?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাব্যের সংখ্যা ৫৬ টি।
২৭। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত প্রথম কবিতার নাম
কী?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত প্রথম কবিতার নাম ‘হিন্দুমেলার
উপহার’।
২৮। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোন কোন দেশের জাতীয় সংগীত
রচনা করেছেন?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীত
রচনা করেছেন।
২৯। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মৃত্যুবরণ করেন কবে?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট (১৩৪৮ বঙ্গাব্দের
২২ শ্রাবণ) মৃত্যুবরণ করেন।
৩০। ‘ঐকতান’ কবিতাটি কোন ছন্দে রচিত?
উত্তর: ঐকতান কবিতাটি সমিল প্রবহমান ছন্দে রচিত।
৩১। ‘উদবারি’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: উদবারি শব্দের অর্থ ঊর্ধ্বে প্রকাশ করে দাও।
৩২। কবির মতে অবজ্ঞার তাপে পৃথিবী কেমন হয়েছে?
উত্তর: কবির মতে অবজ্ঞার তাপে পৃথিবী শুষ্ক ও নিরানন্দ হয়েছে।
৩৩। কবির মতে প্রাণহীন এদেশে চারিধার কেমন?
উত্তর: কবির মতে প্রাণহীন এদেশে চারিধার গানহীন।
৩৪। ঐকতান কবিতায় নানা কবি নানা দিক হতে কী ঢালে?
উত্তর: ঐকতান কবিতায় নানা কবি নানা দিক হতে ঢালে গান।
৩৫। স্বর সাধনায় কবির কী রয়ে গেছে?
উত্তর: স্বর সাধনায় কবির ফাঁক রয়ে গেছে।
৩৬। অগোচর শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: অগোচর শব্দের অর্থ আড়ালে।
৩৭। কবির মতে দেশে দেশে কী রয়েছে?
উত্তর: কবির মতে দেশে দেশে নগর রাজধানী রয়েছে।
৩৮। জীবন সায়াহ্নে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কী
প্রত্যাশা করেছেন?
উত্তর: জীবন সায়াহ্নে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অনাগত ভবিষ্যতের
মৃত্তিকা সংলগ্ন মহৎ কবির আবির্ভাব প্রত্যাশা করেছেন।
৩৯। ‘ঐকতান’ কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয় কোথায়?
উত্তর: ১৩৪৭ বঙ্গাব্দে ‘প্রবাসী’ পত্রিকার ফাল্গুন সংখ্যায়
ঐকতান কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয়।
৪০। জন্মদিনে কাব্যগ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয়
কবে?
উত্তর: জন্মদিনে কাব্যটি ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের পহেলা বৈশাখে প্রথম
প্রকাশিত হয়।
৪১। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে
জন্মগ্রহণ করেন।
৪২। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাইট উপাধি বর্জন করেন
কবে?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৯ সালে নাইট উপাধি বর্জন করেন।
৪৩। ‘হিন্দুমেলার উপহার’ কবিতাটি কত সালে প্রকাশিত
হয়?
উত্তর: হিন্দুমেলার উপহার কবিতাটি ১৮৭৫ সালে প্রকাশিত হয়।
৪৪। কবির মনের গহনে স্বর পাঠায়েছে কে?
উত্তর: কবির মনের গহনে স্বর পাঠায়েছে নির্ঝর।
৪৫। কবি অন্যসব কবির সঙ্গ পেয়ে কী লাভ করেন?
উত্তর: অবি অন্যসব কবির সঙ্গ পেয়ে আনন্দের ভোগ লাভ করেন।
৪৬। মহাজনশূন্যতায় রাত্রি সারা করছে কে?
উত্তর: মহাজনশূন্যতায় দক্ষিণমেরুর ঊর্ধ্বে অজ্ঞাত তারা রাত্রি
সারা করছে।
৪৭। কবি ভ্রমণবৃত্তান্ত কীভাবে পড়েন?
উত্তর: কবি ভ্রমণবৃত্তান্ত অক্ষয় উৎসাহে পড়েন।
৪৮। কবি মাঝে মাঝে কোথায় গেছেন?
উত্তর: কবি মাঝে মাঝে ও পাড়ার প্রাঙ্গণের ধারে গেছেন।
৪৯। কবি কীসের প্রসাদ পান?
উত্তর: কবি গীতভারতীর প্রসাদ পান।
৫০। কবি সর্বদা কীসের খোঁজে থাকেন?
উত্তর: নিজে যা দিতে পারেন না কবি সর্বদা তার খোঁজে থাকেন।
প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, এই ছিল ঐকতান কবিতার মূলভাব ও পরীক্ষায় কমন উপযোগী অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর। এগুলি পরবর্তীতে পড়ার জন্য নিচের শেয়ার অপশন থেকে তোমার টাইমলাইনে শেয়ার করে রাখতে পারো। সবার সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনা করে আজকের ব্লগ এখানেই শেষ করছি।